জুরাছড়ি উপজেলার আলোকিত মানুষ: জ্ঞান রঞ্জন চাকমা ও হরেন্দ্র লাল কার্বারী

Print Friendly, PDF & Email

জুরাছড়ি উপজেলার আলোকিত মানুষ:

প্রারম্ভিক বক্তব্য:- জুরাছড়ি রাংগামাটি পার্বত্য জেলার একটি ক্ষুদ্র, অনুন্নত ও পশ্চা ৎপদ উপজেলা। এই উপজেলায় অনেক গুণীজন জন্মগ্রহণ করেছেন,যারা পার্বত্য চট্রগ্রামের সামাজিক ,সাংস্কৃতিক ,প্রসাশন,সাহিত্য,আইন,চিকিৎসা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন এবং অনেকে রেখে যাচ্ছেন। তাঁদের অনেকেই আমাদের অবচেতনতা হেতু হারিয়ে যাচ্ছেন বিম্মৃতির অতল গহ্বরে। তাদের মহৎ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ আমরা অত্যন্ত অল্প পরিসরে প্রকাশনার মাধ্যমে তাদের জীবনী তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছি।সমিতির ধারাবাহিক গত তিনটি বৈসুক , সাংগ্রাই , বিঝু সংকলনে আমরা যথাক্রমে ১৪ও২ জন আলোকিত মানুষের সংপ্তি জীবনী তুলে ধরেছি।এরই ধারাবাহিকতায় এবারের সংকলনে আমরা ২ জন আলোকিত মানুষের জীবনী ছাপালাম।

আমরা বনযোগীছড়া কিশোর কিশোরী কল্যাণ সমিতির প থেকে কোনরুপ পপাত মুলক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এ কাজে হাত দিইনি। আমরা অত্যন্ত সরল মনে জুরাছড়ি উপজেলার আলোকিত মানুষদের তুলে ধরার প্রয়াস চালিয়েছি মাত্র। তারপর ও আমাদের অসাবধানতা, অজ্ঞতা ও সীমাবদ্ধ জ্ঞানের কারণে ভুল হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। সেজন্য পাঠকমহলের উপদেশ আমরা সাদরে গ্রহণ করবো। আমাদের সীমাবদ্ধতার কারণে জীবণীগুলো অত্যন্ত সংপ্তি আকারে ছাপাতে হলো। নিম্মে জুরাছড়ি উপজেলার আলোকিত মানুষের জীবণীর চতুর্থ পর্ব ছাপানো হলো।

জ্ঞান  রঞ্জন  চাকমা
(শিক্ষা ও  ধর্ম)
জ্ঞান  রঞ্জন  চাকমা  ১৯৩৩ইং  সনে  ২৮শে  ফেব্র“য়ারী  রাংগামাটি  পার্বত্য  জেলার  ১৩৩নং  জুরাছড়ি  মৌজার  সুবলং  খাগড়াছড়ি বড়  বিলের  পশ্চিম  ধারে ‘‘  রতœ  পল্লীতে’’( বর্তমানে  মধ্য  ভিটার  দণি  পাদদেশে) জন্ম  গ্রহণ  করেন। তার  পিতার  নাম  বীর  সিংহ  চাকমা  এবং  মাতার  নাম  পহরবী  চাকমা। তাঁর  শিা  জীবন  শুরু  হয়  ১৯৪৪ সালে সুবলং  এম,ই, স্কুলে। এই  স্কুলে  তিনি  ১৯৪৯ইং সালে  ৬ষ্ঠ  শ্রেণী  পর্যন্ত  পড়াশুনা  করেন।

১৯৫১ইং  সালে  অতিথি  শিক  হিসাবে  সুবলং  এম,ই স্কুলে  এক  বছর  যাবত  শিকতা  করেন। তিনি  ১৯৫২ইং  সালে  সরমাদেবীর  সাথে  বিবাহ  বন্ধনে  আবদ্ধ  হন।

১৯৬৮ইং সনে  জানুয়ারী  ২৫  তারিখে  ঘিলাতলী  সরকারী  প্রাথমিক  বিদ্যালয়ে  সহকারী  শিক  পদে যোগদান  করেন। ১৯৯৪ সালে  ১১ই  নভেম্বর  ঘিলাতলী  সরকারী  প্রাথমিক  বিদ্যালয়  হতে  অবসর  গ্রহণ  করেন। তিনি  ঘিলাতলী  সার্বজনীন  বৌদ্ধ  বিহার   প্রতিষ্ঠায়  গুরুত্বপূর্ণ  অবদান  রাখেন। বর্তমানে তাঁর অনেক ছাত্র-ছাত্রী  উচ্চতর  ডিগ্রী গ্রহণ  করে  বিভিন্ন  প্রতিষ্ঠানে  গুরুত্বপূর্ণ  পদে  কর্মরত  আছেন। বর্তমানে ৭৭  বৎসর বয়স্ক এই গুণীজন নিজ  বাসভবনে  ঘিলাতলী গ্রামে  বসবাস  করে  নীরবে  ধর্ম র্চ্চা করে  যাচ্ছেন।

হরেন্দ্র  লাল  কার্বারী
(ধর্ম  ও  সমাজ  সেবা)
হরেন্দ্র লাল  কার্বারী  রাঙ্গামাটি  পার্বত্য  জেলার  ১৩৩নং  জুরাছড়ি  মৌজায়  ১৯৬৫ইং  সালে  ঘিলাতলী  গ্রামে জম্ম  গ্রহণ  করেন।  পিতা – হরিজয়  কার্বারী,  মাতা- ভারতশ্বরী  চাকমা ।  তিনি  সুবলং  এম,ই স্কুলে  চতুর্থ  শ্রেণী  পর্যন্ত  লেখাপড়া  করেন। তিনি  ঘিলাতলী  সার্বজনীন  বৌদ্ধ  বিহারের   গোসলখানা,  পায়খানা  ঘর  পাকা  করেন  নিজ  অর্থায়নে।   এছাড়াও  বিহারের  জন্য  প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র  দান  করেন।  তিনি  ঘিলাতলী  জুনিয়র   স্কুলের  জন্য ৬০  ডেসিমেল  পরিমাণ  জমি  ফুটবল  মাঠ  হিসাবে  প্রদান  করেন। তাছাড়া  তিনি  নিজ  অর্থায়নে  ঘিলাতুলীর বিভিন্ন  স্থানে  বাঁশের সাঁকো  তৈরী  করতেন  যা  সাধারণ  মানুষের  খুবই  উপকার  হতো।  জুনিয়র  স্কুল  ও  ঘিলাতলী  সার্বজনীন  বৌদ্ধ  বিহার  প্রতিষ্ঠায়  তিনি  গুরুত্বপূর্ণ    অবদান  রাখেন।  বর্তমানে  তিনি  সমাজে  বিভিন্ন  সেবামূলক  কাজে  রত  আছেন।

গ্রন্থনা:নির্মল কান্তি চাক্মা, জয়মতি তালুকদার, দিলীপ কুমার চাক্‌মা ও উত্তম চাক্‌মা

বিদ্রঃ- এই লেখাটি ২০০৯ সালে  বনযোগী ছড়া কিশোর কিশোরী কল্যাণ সমিতি কর্তৃক জুনিপুক বইয়ে প্রকাশিত হয়।

মূল তথ্য লিংকঃ- http://banajogichara.org/?p=106

Share This Post

One Response to "জুরাছড়ি উপজেলার আলোকিত মানুষ: জ্ঞান রঞ্জন চাকমা ও হরেন্দ্র লাল কার্বারী"

Post Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.