জীবনের ঠিকানা ***সুদীপ্ত চাকমা মিকাডো***

Print Friendly, PDF & Email

আখের ক্ষেত আর পুকুরের মাছ

ছিল আরো কত রিজার্ভের গাছ

বিকালের রোদে ধান শালিকের গানে

কাণা বাঁশির সুর ঢেউ তুলতো মনে

বেশ তো ছিলাম তুমি আর আমি আমাদের ছোট্ট কুঁড়েঘরে

সুখের বসবাস ছিল ঘর জুড়ে।

 

ঘুম ভাঙতো সকালের রোদে

ঢেঁকি বানতাম ক্রোধে

গেংখুলির পালাগান চলছে শুনি

মন ছুটে চলে তখনি

মাষ্টার মশাই যখন আসেন বাসায়

পড়ায় থাকতাম বাবার শাসনে

দিনগুলি বেশি মনে পড়ে আষাঢ়ের মাসে

স্বপ্নে ঘড় বানাতাম খড় আর বাঁশে

 

আশির দশক পেরোনোর আগেই

তোলপাড় উঠে আর পরে

জীবন নিয়ে পালানোর ভয়ে

মদ যেন ভালোই পেয়ে ধরে

দিক বিদিক জানা অজানা নেই

পিছনে রেখে সবই

ভারতেই নিলাম আশ্রয়

মাঝে এখনও মনে পড়ে স্বপ্ন কতিপয়।

 

নব্বই দশকের ঠিক আগেই

নাগাল পায় শুধু দূর সাহসের

আজ এই গ্রাম কাল ঐ গ্রাম জ্বলে

জীবন শংকায় ছিলাম সকলে।

পাছে আরো যুব সমাজ চলে অন্ধকারের জলে

মদের সাথে পরিচয় ছিল বলে

গাজা হেরোইনের সাথে পরিচয় ও ঘটায় তলে তলে,

ঐ সব ঘটে ছিল তবে কার আদলে

রাতের এক অদৃশ্য শক্তির বলে

নাকি সমাজের কোন এক শ্রেণীর ছলে ?

 

নব্বই পেরোনোর সাথে সাথে

জ্বলছে শুধু দৃশ্যের আগুণ

শুরু হলো আরো মনের আগুন

হারিয়েও বুঝিনি মা

শিক্ষায় শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন

ভুলে ছিল কত সন্তান মা বাবার সেই যত্ন।

 

বন্ধুদের সাথে গেংখুলি গানে কাটাতাম

জ্যোন্সার রাতে জুম ঘরে থাকতাম

জুনি পোকা আর ঝিঁঝি পোকার গানে

পালা করে গান ধরটাম জনে জনে।

আজ শুধু খুঁজে ফিরি সেই সব দিনগুলি

জীবন থেকে কি করে সেইসব দিন ভুলি।

বেশি কিছু চায়নি শুধু চেয়েছি বলতে এই দেশ আমার

সেখানে ও নেই যেন আমার অধিকার

রাষ্ট্র যন্ত্রের নানা অজুহাতে আমি খুঁজি নিজেকে

তবে কি ঘুচবে না আমার জীবনের সম্ভবনা ?

কোন সাহসেই রচনা করি আমার জীবনের ঠিকানা ?

Share This Post

Post Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.