মানুষ কর্মফলে আর্যকুলে জন্ম হয়

১। বুদ্ধ বলেছেন – “দুল্লভঞ্চ মনুসসত্তং” অর্থাৎ- মনুষ্য জন্ম অতি দুর্লভ। মানুষ কর্মফলে জন্ম নেয়। ছেলে হোক মেয়ে হোক তারা অতীতে বিভিন্ন পুণ্য করার ফলে আর্য্য মাতা-পিতার ঘরে জন্মগ্রহণ করে। আর্য্য মাতা-পিতা তাদের সযত্নে লালন পালন করে, ফলে তাদের দেহের আকৃতি প্রকৃতি সুন্দর হয়। ছেলে হোক মেয়ে হোক, আর্য্য মাতা-পিতা তাদেরকে সুশিক্ষিত করে তুলবে। ফলে তাদের স্বভাব চরিত্র সুন্দর হয়, তাদের পূর্বকৃত পুণ্যের ফলে আর্য্য মাতা-পিতার ঘরে তারা অভাব অনটন ভোগ করে না। তাদের পূর্বকৃত পুণ্য থাকার ফলে ইহজন্মেও তাদের ধর্ম চেতনা জাগ্রত থাকবে। তাদের কল্যাণমিত্র লাভ হবে এমন কি বুদ্ধ দর্শনও হতে পারে। বুদ্ধের ছায়াতে প্রব্রজিত হতে পারে অথবা যে কোন সময়ে প্রব্রজ্যা জীবন লাভ করতে পারে। অতীত অতীত পুণ্যের প্রভাবে এসব লাভ করা যায়।

 

২।     প্রশ্ন:- কি রকম পুণ্যের প্রভাবে বর্ণিত বিষয় সমূহ লাভ হয়?

উত্তর:- অতীতে যারা সৎ চেতনার মাধ্যমে দান ধর্ম করেছেন, শীল পালন করেছেন, ভিক্ষুসংঘের চতুর প্রত্যয় দিয়ে সেবা পূজা করেছেন, সংঘদান করেছেন ও অষ্টপরিস্কার দান করেছেন এই সমস্ত পুণ্যের প্রভাবে নারী হোক বা পুরুষ হোক আর্য্যকুলে সুশ্রী মানব দেহ লাভ করেন। তারা দেশের কাজ করে জনগণের নিকট সুপরিচিত হন, তারা সমাজের উন্নতিমূলক কাজ করে থাকেন। যারা আর্য্য তারা বুদ্ধের প্রতি প্রগাঢ় বিশ্বাস করেন, কর্ম ও কর্মফল বিশ্বাস করেন। তাদের লোভ, দ্বেষ, মোহ থাকে না; তারা দয়ালু, পরোপকারী, আত্ম ত্যাগী হন।

 

৩।     প্রশ্ন:- কেন মানুষ অনার্য্য হয়?

উত্তর:- অকুশল কর্মের ফলে মানুষ পাপাত্মা হয়। বিভিন্ন তৃঞ্চার কারণে সে পুনর্জন্ম করত: অনার্য্য কুলে জন্ম হয় । অনার্য্য বলতে অজ্ঞানী, ধর্মজ্ঞানে অশিক্ষিত, মূর্খ মাতা-পিতার ঘরে জন্ম হলে অযত্নের মধ্যে লালিত পালিত হয়। সে সুশিক্ষা পাবে না ফলে মূর্খ জীবন-যাপন করবে, সব সময় অভাব অনটনের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাতে হয়। সে ইহজন্মেও অকুশল কর্ম করতে থাকবে, ফলে তার কোন পুণ্য সঞ্চয় হবে না। সে ইহ জীবনে নানা রকম দু:খ ভোগ করবে। বুদ্ধ আরও বলেছেন নিজকে নিজে রক্ষা করতে পারে, নিজকে নিজে ধ্বংস হতে পারে। নিজের কর্মের গতির উপর সব নির্ভর করে, কর্মের গতিতে আর্য্য ও অনার্য্য হওয়া যায়। পাপ পুণ্যের ফলানুসারে মানুষ সুখ দু:খের ভাগী হয়। কবির ভাষায়- ” কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক, কে বলে তা বহুদূর; মানুষের মাঝে স্বর্গ নরক মানুষেতে সুরাসুর”। একটু চিন্তা করলে দেখতে পায় মানুষ কেহ শিক্ষিত, কেহ অশিক্ষিত, কেহ ধনী, কেহ গরীব, কেহ ডাক্তার, কেহ ইঞ্জিনিয়ার, কেহ বৈজ্ঞানিক, আবার কেহ দিন মজুর, কেহ কুলি, কেহ চাষী এবং বিভিন্ন পোজীবি সবই একমাত্র স্ব স্ব কর্মের দ্বারাই হয়ে থাকে।

Share This Post

One Response to "মানুষ কর্মফলে আর্যকুলে জন্ম হয়"

Post Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.